বগুড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীর মামলায় পুলিশের এসআইকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি, নির্যাতন করে হত্যাচেষ্টা ও গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী তমানিয়া আফরিন। এই মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ইফতেখায়ের মো: গাউসুল আজম বুধবার দুপুরে আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক নুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন।এসআই গাউসুল আজম নওগাঁ জেলায় রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এবং জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের চেঁচড়া গ্রামের শামছুল হক ও ফিরোজা বেগমের ছেলে।আদালত সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর পৌর এলাকার টাউন কলোনীর বাসিন্দা গৃহবধূ তমানিয়া আফরিন তার স্বামী পুলিশের এসআই ইফতেখায়ের গাউসুল আজমকে আসামি করে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এর আদালতে ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন।অভিযোগে উল্লেখ করেন, তমানিয়া আফরিন বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের ইংরেজি মাস্টার্স শ্রেণীতে লেখাপড়া করেন। ফেসবুকে মাধ্যমে তার সাথে এসআই গাউসুল আজমের পরিচয় ও তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তার রেজিস্ট্রি ও কাবিননামা মূলে বিয়ে হয়। এরপর বাদি দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।বিয়ের কয়েক মাস পর ভুক্তভোগী জানতে পারেন, তার স্বামীর স্ত্রী ও সন্তান আছে এবং তিনি বিষয়টি গোপন করে তাকে বিয়ে করেছেন।এদিকে অভিযুক্ত পুলিশের ওই এসআই গাউসুল আজম ১৭ আগস্ট দুপুরে তার দ্বিতীয় পক্ষের শ্বশুরবাড়ি শেরপুর টাউন কলোনির বাসায় যান এবং যৌতুক হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। না পেয়ে তার স্ত্রীকে কিল-ঘুষি মারাসহ শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তার তলপেটে লাথি মেরে গুরুতর আহত করায় তমানিয়া আফরিনের গর্ভপাত হয়।এ ঘটনায় স্বামী পুলিশের এসআই ইফতেখায়ের গাউসুল আজমকে আসামি করে বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নং-২-এর আদালতে ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর এই মামলা দায়ের করেন তমানিয়া আফরিন।আইনজীবী এস এম আবুল কালাম আজাদ জানান, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা গাউসুল আজম উচ্চ আদালত থেকে আট সপ্তাহের জামিন নিয়ে এসেছিলেন। আট সপ্তাহ পর তিনি বুধবার দুপুরে আবার নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করলে আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২-এর স্পেশাল পিপি আশেকুর রহমান সুজন জানান, স্ত্রীর দায়েরকৃত মামলায় আদালতের বিজ্ঞ বিচারক পুলিশ কর্মকর্তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :