• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার-২


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২১, ১১:৩০ পিএম
উত্তরায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার-২

রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তাঁর নিজ কার্যালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের দুদিনের মধ্যে হত্যা রহস্য উন্মোচনসহ ঘাতক দুজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা।’
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বেলকুচির মো মাসুদ রানা ও মো. মিজানুর রহমান। তাদের কাছ থেকে নিহতের জামার পুড়িয়ে দেওয়া অংশ বিশেষ ও রক্তমাখা জামা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে ঘটনাস্থল থেকে এক পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঁচি উদ্ধার করা হয়েছে।উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, গত রোববার উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নম্বর সেক্টরের ১০ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়ির কেয়ারটেকার সুবল চন্দ্র পাল (৪৪) খুন হন। এ খুনের ঘটনায় থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করে। কিন্তু আমরা ঘটনার দুই দিনের মধ্যে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাসহ রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। উত্তরা পশ্চিম থানার একটি টিম গতকাল সোমবার সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে অভিযান চালিয়ে খুনের ঘটনায় সরাসরি জড়িত মাসুদ ও মিজানকে গ্রেপ্তার করে।

হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ ওই বাসায় ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেড় মাস আগে তিনি চাকরি ছেড়ে সিরাজগঞ্জ চলে যান। সেখানে একটি লুঙ্গি কারখানায় মাইক্রোবাসের চালক হিসেবে কাজ নেন। মাসুদ এর আগে প্রায়ই নিহত সুবলের কক্ষে ইয়াবা সেবন করতেন এবং নারী নিয়ে এসে কক্ষটি ব্যবহার করতেন। প্রাথমিকভাবে মাসুদের পরিকল্পনা ছিল, গভীর রাতে সুবলের হাত-পা বেঁধে জিম্মি করে রাখবে। বাড়ির মালিক ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার সময়ে তারা বাসায় প্রবেশ করে বাড়ির সদস্যদের জিম্মি করে লুণ্ঠন কাজ সম্পন্ন করবে।পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী মাসুদ ভিকটিম সুবলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মাসুদ সুবলকে জানান, তিনি ও তাঁর চাচাতো ভাই মিজানুর রহমান ঢাকায় এসে রাতে সুবলের কক্ষে থাকবেন। সে মোতাবেক গত ১০ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁরা কেয়ারটেকার সুবলের কক্ষে প্রবেশ করেন ও তাঁর কক্ষে অবস্থান নেন এবং সেখানে ইয়াবা সেবন করেন।সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিকল্পনা মোতাবেক দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মাসুদ ও মিজান ঘুমন্ত সুবলের হাত-পা বাঁধার চেষ্টা করলে তিনি জেগে ওঠেন। কক্ষে থাকা একটি ধারালো কাঁচি সুবলের গলায় ধরে সুবলকে চুপ থাকতে বলেন তারা। এরপর মিজান সুবলের গলায় নাইলনের রশি পেঁচিয়ে ধরলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মাসুদ রানা কেয়ারটেকার সুবলের গলায় ধারালো কাঁচিটি ঢুকিয়ে দেন। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে মিজান ও মাসুদ সুবলের গলা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মাসুদ ও মিজান শক্ত করে সুবলের হাত-পা বাঁধেন। এরপর কক্ষের বাইরে পানির ট্যাপে শরীরে থাকা রক্তের ছাপ ধুয়ে ফেলেন এবং জামাকাপড়ে রক্তের ছাপ মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। পরবর্তী সময়ে মাসুদ ও মিজান মালিকের বাসায় লুণ্ঠনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে উক্ত স্থান ত্যাগ করেন। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করে নিজ গ্রাম সিরাজগঞ্জ চলে যান।


Side banner
Link copied!