গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দরপতন হয়েছে। প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম প্রায় ২১ ডলার কমে গেছে। কিন্তু ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে দেশের বাজারে। এক সপ্তাহে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম দু’দফা বাড়ানো হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম বেড়েছে চার হাজার টাকার ওপরে।
বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজারে দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) নেতারা বলছেন, দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয় স্থানীয় বাজারের পাকা স্বর্ণের ওপর ভিত্তি করে। স্থানীয় বাজারে পাকা স্বর্ণের দাম বাড়লে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। গত সপ্তাহে রাজধানীর তাঁতিবাজারে পাকা স্বর্ণের দাম অনেক বেড়েছে। এ কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৭৭১ দশমিক শূন্য আট ডলার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেনের একপর্যায়ে স্বর্ণের দাম বেড়ে প্রতি আউন্স ১ হাজার ৭৮২ দশমিক ৮৮ ডলারে ওঠে। তৃতীয় কার্যদিবসের লেনদেনের একপর্যায়ে তা আরও বেড়ে এক হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ ডলারে ওঠে।
তবে এরপর পতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণের দাম। সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে টানা দরপতন হয় স্বর্ণের। এতে ১৮৩ দশমিক ৫৬ ডলার থেকে কমে প্রতি আউন্সের দাম এক হাজার ৭৫০ দশমিক ১৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ দুদিনে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ৩৩ দশমিক ৪২ ডলার। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমেছে এক দশমিক ১৬ শতাংশ বা ২০ দশমিক ৯৪ ডলার।
বিশ্ববাজারে দাম কমার মধ্যেই গত সপ্তাহের ১৩ ও ১৮ নভেম্বর দেশের বাজারে দু’দফায় স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে সর্বশেষ ১৮ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫৭০ টাকা বাড়িয়ে ৮৪ হাজার ২১৪ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার ৩৬৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৬৮ হাজার ৯৩৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে ৫৬ হাজার ৬৮৭ টাকা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি বাবুল দত্ত বলেন, লোকাল মার্কেটে পাকা স্বর্ণের দাম কত তার ওপর নির্ভর করে আমরা দাম নির্ধারণ করি। এর আগে বিশ্ববাজারে যখন দাম বেড়েছে, আমাদের এখানে ওইভাবে দাম সমন্বয় হয়নি। এ কারণে আমাদের স্থানীয় বাজারে দাম না কমে উল্টো বেড়ে গেছে। আমরা তাঁতীবাজারের পাকা স্বর্ণের যে দাম, সেটা বিবেচনায় এনে দাম নির্ধারণ করি।
এদিকে, স্বর্ণের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপা ও প্লাটিনামের দামেও কমেছে। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম তিন দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ২০ দশমিক ৯৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর প্লাটিনামের দাম পাঁচ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ কমে ৯৭৬ দশমিক ৯৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :