• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সমুদ্রের পানি পরিশোধনের ফিল্টার তৈরি করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী


FavIcon
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২০, ১২:০৯ পিএম
সমুদ্রের পানি পরিশোধনের ফিল্টার তৈরি করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী

একবার ভাবুন তো, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে সমুদ্রের পানি থেকে নিরাপদ খাবার পানি তৈরি করা হচ্ছে! কথাটি শুনতে যতটুকু মজার মনে হচ্ছে, কাজটি করা ঠিক ততটুকু কঠিন। কঠিন কাজটি সফলভাবে শেষ করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. রাসেল দাশ, তার সহযোগী সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ড. গুরং-শো এবং গবেষকদল।এ বিষয়ে ড. রাসেল দাশ জানান, বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিকের দূষণ অপসারণ একবিংশ শতাব্দির জন্য অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। তার থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, সমুদ্রের লবণাক্ত পানি থেকে নিরাপদ খাবারের পানি তৈরি করা। বাংলাদেশে অলিগলি, রাস্তা থেকে শুরু করে বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যন্ত সব জায়গায় প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল দেখা যায়।গবেষকদলটি এ ধরনের পরিত্যক্ত বোতল থেকে ইলেক্ট্রো-স্পুন প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এমন একধরনের ন্যানোফাইব্রাস ফিল্টার তৈরি করেছে, যা দিয়ে ৯৯.৯% সমুদ্রের পানি পাতন প্রকিয়ায় নির্লবণীকরণ করা সম্ভব। সাধারণত এ প্রযুক্তিতে পানি পরিশোধন করা খুব ব্যয়বহুল। কারণ এ ধরনের ফিল্টার তৈরির জন্য অনেক মূল্যবান আর্টিফিশিয়াল পলিমার ব্যবহার করতে হয়।গবেষকদলটি এ ধরনের মূল্যবান পলিমার ব্যবহার না করে প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত বোতল থেকে এমন একধরনের পলিমার ব্যবহার করেছেন। যা অনেক সাশ্রয়ী এবং এতে পানির মোট পরিশোধন ব্যয় অনেকাংশে কমে যাবে। তাদের তৈরি ফিল্টারটি প্রতি স্কয়ার মিটারে প্রতিঘণ্টায় সমুদ্রের পানি থেকে প্রায় ২৫ লিটার নিরাপদ খাবারের পানি তৈরি করতে সক্ষম।
পানি দূষিত হওয়ার কারণে একবিংশ শতাব্দিতে পৃথিবীর ৭০০ মিলিয়ন লোক নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। জাতিসংঘের মতে, ২০২৫ সালের মধ্যে সারা বিশ্বের ১.৮ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির সুবিধা পাবে না। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪ মিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।ড. রাসেল দাশ গত আট বছর ধরে মালয়েশিয়া, আমেরিকা এবং জার্মানিতে ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমুদ্রের পানি পরিশোধন করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এ ধরনের কাজের জন্য ২০১৫ সালে তিনি ‘এলসেভিয়ার-এটলাস অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। এখন তিনি জাপানের কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়ে জাপান সরকারের অধীনে পোস্ট-ডক্টরাল জেএসপিএস ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন।ড. রাসেল দাশ বলেন, ‘সমুদ্রের পানি নির্লবণীকরণের এ প্রক্রিয়া বাংলাদেশে ব্যবহার করে সুপেয় পানির চাহিদা অনেকাংশে মেটানো সম্ভব। বিশ্বের অনেক দেশ যেমন সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ইসরাইল, সুইডেন, ইউনাইটেড কিংডম, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স সমুদ্রের পানি বিশুদ্ধ করে সেচ, কৃষি, শিল্প ও গার্হস্থ্য খাতে ব্যবহার করে চাহিদা পূরণ করছে।’তিনি জানান, তাদের কাজটি জার্নাল অব ওয়াটার প্রোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি বৈজ্ঞানিক সাময়িকীতে গত ৭ মে প্রকাশিত হয়।


Side banner
Link copied!