• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মেডিক্যাল শিক্ষকের গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় মামলা,পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি


FavIcon
জহুরুল ইসলাম:
প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৪, ০৭:০৩ পিএম
মেডিক্যাল শিক্ষকের গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় মামলা,পরিদর্শনে তদন্ত কমিটি

শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ক্লাস রুমে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটি সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন।


শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী জানান, তদন্ত কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ, কমিটির অন্য দুই সদস্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক মহিউদ্দিন মাতুব্বর এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন মঙ্গলবার (৫ মার্চ) ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর আগে সোমবার রাতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এ কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


এদিকে, শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অভিযুক্ত শিক্ষক ডা: রায়হান শরিফের কাছ থেকে আরও অস্ত্র উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।


সিরাজগঞ্জ ডিবির ওসি জুলহাজ উদ্দীন জানান, শিক্ষক রায়হান শরীফের দেওয়া তথ্যমতে সোমবার রাতে তার ব্যবহৃত একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় আরো একটি পিস্তল, ৮১ রাউন্ড তাজা গুলি, ১টি গুলির খোসা, ৪টি ম্যাগজিন, ২টি বিদেশি কাতানা (ছোরা) ও ১০টি অত্যাধুনিক বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া পিস্তল দুটির কোন নিবন্ধন নেই।


অপরদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবীতে মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে কলেজের সামনে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেওয়ায় ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা কলেজে ফিরে যায়।


এ ঘটনার পর দুপুরে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জান্নাত আরা হেনরী কলেজে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন তিনি।


সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ক্লাস রুমে শিক্ষকের পিস্তলের গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় সোমবার রাতে পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। দুইটি মামলাই তদন্ত করতে ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


আহত শিক্ষার্থীর বাবা বগুড়ার ধুনট উপজেলার ধামাচাপা গ্রামের আব্দুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে প্রথম মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফকে আসামী এবং গুলিতে আহত আরাফাত আমিন তমালের ৪ সহপাঠিকে সাক্ষী করা হয়েছে।


অপরদিকে, অবৈধ পিস্তল ব্যবহার এবং আরো একটি পিস্তল, গুলি ও ছুরি উদ্ধারের অভিযোগে ডিবির উপ-পরিদর্শক ওয়াদুদ আলী বাদী হয়ে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা করেন।


এদিকে, সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, ক্লাস রুমে শিক্ষার্থীকে গুলি, অবৈধ পিস্তলের ব্যবহার এবং প্রভাষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে উঠা শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতন ও কলেজ অভ্যন্তরে নেশা সংক্রান্ত সকল বিষয়ই তদন্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় দায়ের হওয়া দুইটি মামলাই ডিবি পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।


এরআগে সোমবার বিকেলে মৌখিক পরীক্ষা চলাকালে মেডিক্যালের এমবিবিএস অষ্টম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে (২২) গুলি করেন কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ। সন্ধ্যার পর তার পায়ে অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করেন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গুলির ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে আটকে রেখে কলেজ অভ্যন্তরে বিক্ষোভ করায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে কলেজ ক্যাম্পাস। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিক্ষক রায়হান শরীফকে হেফাজতে নেয় এবং তার ব্যবহৃত একটি পিস্তল জব্দ করেন। অভিযুক্ত প্রভাষক রায়হান শরীফ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে এবং শহরের দত্তবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা।


Side banner
Link copied!