• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জ এলজিইডি‍‍র নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলীর চেয়ার দখলের অভিযোগ


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৪, ০৩:৩৭ পিএম
সিরাজগঞ্জ এলজিইডি‍‍র নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলীর চেয়ার দখলের অভিযোগ

এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম তার দায়িত্ব হস্তান্তর না করলেও আর্টিকেল ৪৭ অমান্য করে সিরাজগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর তাড়াহুরা করে চেয়ার দখলের অভিযোগ উঠেছে নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। 
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ১৯ মার্চে ইমেইল যোগে বদলী আদেশ পাওয়ায় আর্টিকেল ৪৭ অমান্য করে ২০ মার্চ সকালে লোকজন নিয়ে চেয়ার দখল করে বসে পড়েন নবাগত সিরাজগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনিরুল ইসলাম।এমন কর্মকান্ড  ইতিপূর্বে সিরাজগঞ্জে জেলার কোন কার্যালয়ে ঘটেনি।
দায়িত্ব বুঝে নেবার পূর্বেই চেয়ার দখল কর্মকান্ডে এলজিইডি অফিসের প্রধান কর্মকর্তার এমন আচারণে সিরাজগঞ্জ এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে  আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা-১২০৭ এর স্মারক ৪৬.০২.০০০০.০০১.৯৯.১৩০.১৮-১১৯৫২ তারিখ: ১৫.১১.২০২৩ খ্রি. এর মারফত পাবনা অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তর, নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মনিরুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে বদলী করা হয়। পরবর্তী স্মারক ৪৬.০২.০০০০. ০০১.৯৯.১৩০. ১৮-১২৩৭৬ তারিখ: ২২.১১.২০২৩ খ্রি. এর একটি পত্রের মাধ্যমে পূর্বের আদেশ স্থগিত করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর প্রধান প্রকৌশলী (গ্রেড-১) মো: আলি আখতার হোসেন এর স্বাক্ষরিত একটি পত্র স্মারক নং-৪৬.০২.০০০০.০০১.৯৯.১৩০.১৮-৪৩১৬ তারিখ: ১৯.৩.২০২৪খ্রি. স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে পুনরায় মনিরুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে বদলী করা হয়।
বদলীর আদেশ ১৯ মার্চে পাওয়ার সাথে সাথে ২০ মার্চ সিরাজগঞ্জ এলজিইডি অফিসে এসে আকস্মিকভাবে  নির্বাহী প্রকৌশলীর চেয়ার দখল করেন।সচেতন মহল মনে করছে, চাকুরী করলে বদলী হবে। বদলী হলে নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব বুঝে নিবে। কিন্তু সিরাজগঞ্জ এলজিইডি অফিসে নাটকীয়ভাবে চর দখলের  মতো নির্বাহী প্রকৌশলীর চেয়ার দখল করলেন। যেটা ক্ষমতা দখলের শামিল বলে  মনে করছেন সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম বলেন, চাকুরী করলে বদলী হতে হয় এটা চাকুরীর নিয়ম। কিন্তু আর্টিকেল ৪৭ না মেনে জোরপূর্বক চেয়ার দখল করা নিয়মবহির্ভুত ও সরকারী  নীতিমালা লংঘনের বহিপ্রকাশ।
এবিষয়ে নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলতে চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল রিসিফ করেননি।
আর্টিকেল ৪৭ নিয়ম হলো কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হস্তান্তর ও গ্রহণের সনদ। একজন কর্মকর্তা যখন অন্যত্র বদলি হন তখন অব্যাহতি গ্রহণের পূর্বে তার পদে কোন ব্যক্তিকে বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত অন্য কোন ব্যক্তিকে তার যাবতীয় দায়িত্ব দেয়াই আর্টিকেল ৪৭ এর কাজ।

একজন কর্মকর্তার বদলির আদেশ হল আর সংগে সংগেই তিনি অব্যাহতি নিয়ে চলে যাবেন এটা হতে পারে না । তার উপর ন্যস্তকৃত দায়িত্ব ও কর্তব্য তাহলে কে/কেমন করে পালন করবেন? একজন সাধারণ কর্মকর্তার (এসডিওর)জন্য এটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও যিনি আয়ন ও ব্যয়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন তার জন্য এটা অনেক কিছু। আর যিনি দায়িত্ব গ্রহন করবেন তাকে সকল দপ্তরীর নথি বুঝে নিতে হবে।

যেমন তার উপর ন্যস্তকৃত অফিসের যাবতীয় সম্পদ হস্তান্তর, ব্যাংক হিসাব হস্তান্তর (যার মাধ্যমে তিনি বরাদ্দকৃত অর্থ  বন্টন ও গেজেটেড ননগেজেটেড বিল ভাতাদি হিসাবরক্ষণ অফিসে ফরওয়ার্ড করবেন) গুরুত্বপূর্ণ নথি,বরাদ্দ রেজিস্ট্রার, ক্যাশ বই, গুরুত্বপূর্ণ মামলা সংক্রান্ত নথি,অগ্রিম রেজিস্ট্রার (যদি থাকে), ভ্যাট ও আয়কর কর্তন রেজিস্ট্রার, যোগাযোগ সংক্রান্ত  নির্দেশনা দায়িত্ব গ্রহনকারী কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে দিয়ে অব্যাহতি গ্রহণ করার জন্যই আর্টিকেল-৪৭ এর প্রবর্তন।

কাজেই এগুলি দায়িত্ব সম্পন্ন করেই উভয় কর্মকর্তা নিজ নিজ কর্মস্থল হতে অব্যাহতি নিয়ে নতুন বা বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান করবেন, সরকারী বিধি অনুযায়ী তার দায়িত্ব ও কর্তব্য হস্তান্তর ব্যতিরেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া যাবে না। আয়ন ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন কালে সরকারের সকল আর্থিক বিধিবিধান যেমন পিপিআর, ডেলিগেশন অব ফিন্যান্সিয়াল পাওয়ার, ট্রেজারী রুলস, জেনারেল ফিন্যান্সিয়াল রুলস,সময় জারীকৃত সরকারি আদেশ এগুলি পরিপালন সাপেক্ষে সকল প্রকার ব্যয় নিশ্চিত করা। একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচণায় সকল নিয়মকানুন  উপেক্ষা করে চেয়ার দখল করে সোস্যল মিডিয়ায়  ফুলেল শুভেচ্ছায় উদ্ভাসিত হওয়া প্রথম শ্রেণির একজন কর্মকর্তার সাজে না। বিষয়টি নিয়ে এলজিইডি'র সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


Side banner
Link copied!