• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা,গ্রাহকের অর্থ ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট


FavIcon
এ এস এম মাহফুজুর রহমান (হেলাল):
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১, ০৪:০১ পিএম
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা,গ্রাহকের অর্থ ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ছবি: সংগৃহীত

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচার বিষয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। রিটে তদন্তের মাধ্যমে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অর্থ ফেরতের পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানানো হয়।বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এবং ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের দুইজন গ্রাহকের পক্ষে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের বিষয়টি উল্লেখ করে জনস্বার্থে রিটটি করা হয়।রিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ১৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার রিটটি করেন। ব্যারিস্টার হুমায়ন কবির পল্লব রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আইনজীবী হুমায়ুন কবির বলেন ,মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে অনলাইন পেমেন্টের সুবিধা, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মতো ই-কমার্সভিত্তিক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।তিনি জানান, গত কয়েক বছরে কিছু প্রতিষ্ঠান সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কার্যকর নজরদারির অভাবের সুযোগে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্ট নামে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করে হাজার হাজর কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবিতে রিট করা হয়েছে।রিটে উল্লেখ করা হয়, ইভ্যলি, ধামাকা, আলেশা মার্ট, কিউকম, দালাল, ই-অরেঞ্জ, আলাদিনের প্রদীপ, দারাজ প্রতিষ্ঠার মাত্র দু-এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন অফারের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা মূলত মাল্টিলেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে এ অর্থ সংগ্রহ করে। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী এসব কোম্পানি বিপুল অর্থ ইতোমধ্যে বিদেশে পাচার করেছে।
ই-ওয়ালেট, গিফট কার্ডসহ আরও অন্যান্য অ-অনুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে লাখ লাখ গ্রাহককে সর্বস্বান্ত করেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায় এসব অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে। কিন্তু তারা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বছরের পর বছর নোটিশগ্রহীতাদের কার্যকর নজরদারির অভাবে এসব কোম্পানি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারি দপ্তরগুলোর তাদের সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগে গাফিলতি ও ব্যর্থতার ফলে বাংলাদেশের লাখ লাখ গ্রাহক যাদের বেশিরভাগই তরুণ আজ সর্বস্বান্ত।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যে সম্ভাবনা সেটিও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। সংশ্লিষ্টরা কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না।রিটে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে যাদের গাফিলতির কারণে লাখ লাখ গ্রাহক সর্বস্বান্ত হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, দুদকের মাধ্যমে এ পর্যন্ত এসব কোম্পানির মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ বের করে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব কোম্পানিতে কত টাকা লেনদেন হয়েছে এবং গ্রাহকরা মোট কত টাকা দিয়েছে তা চিহ্নিত করা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ পর্যন্ত কতগুলো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে এবং তারা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা কমিশনকে প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ অনুযায়ী, ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়াসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি, অসম প্রতিযোগিতা রোধ, জনসচেতনতা তৈরি ইত্যাদি পদক্ষেপ নেওয়া, জাতীয় ডিজিটাল বাণিজ্যনীতি, ২০১৮ অনুযায়ী দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে হেল্প ডেস্ক অবিলম্বে চালু করতে বলা হয়েছে।গত সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন এবং ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের দুইজন গ্রাহকের পক্ষে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের বিষয়টি উল্লেখ করে জনস্বার্থে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশের পর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিট করা হয়।


Side banner
Link copied!