
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ মহাসচিব এই চিঠি পাঠান, যা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান।
চিঠিতে, জাতিসংঘ মহাসচিব উল্লেখ করেন যে, আগামী মার্চ মাসে তিনি বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এই সফরের সময় তিনি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন এবং বাংলাদেশকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে চলমান পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার কথা পুনর্ব্যক্ত করতে চান।
গুতেরেস, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ওপর সৃষ্ট প্রভাব এবং রাখাইনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে ড. ইউনূসের উদ্বেগের প্রতি সহমত প্রকাশ করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে বাংলাদেশের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় করার কথাও বলেন।
এছাড়া, তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংস্থা (আসিয়ান) এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। গুতেরেসের মতে, মিয়ানমার সংকটের রাজনৈতিক সমাধান এবং রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবর্তনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য কাজ করা প্রয়োজন।
চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব, রাখাইনের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, জাতিসংঘ এই ইস্যুতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করবে, যার মধ্যে রয়েছে জরুরি ত্রাণ সরবরাহ এবং মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
জাতিসংঘ মহাসচিব আসিয়ানের সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে আরও জানান, রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন নতুনভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে ভূমিকা রাখবে। তিনি আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর পরামর্শের পর সম্মেলনের সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনার অপেক্ষায় আছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের রোহিঙ্গা এবং অগ্রাধিকার ইস্যুবিষয়ক বিশেষ দূত ড. খলিলুর রহমান ৭ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ড. ইউনূসের পাঠানো আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
এই চিঠি, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে জাতিসংঘের অঙ্গীকার এবং বাংলাদেশের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থনের প্রমাণ স্বরূপ।
আপনার মতামত লিখুন :