
ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে চারজন এবং বনে ব্রাক শহরে একজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ)। মধ্য ও উপকূলবর্তী শহরগুলিতে একাধিক স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর মোট পাঁচজনের এই মৃত্যু ঘটে। হামলায় বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এমডিএ জানিয়েছে, তারা চারটি স্থানে তাৎক্ষণিক সাড়া দিয়েছে এবং অনেক আহত ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।শুক্রবার থেকে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ জনে।
অন্যদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে দেশটির সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত ও ১ হাজার ২৭৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এদিকে তেল আবিবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আতঙ্ক শুরু হয়েছে।ধ্বংসস্তূপে চলছে উদ্ধার অভিযান। সোমবার ভোরে ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের তেল আবিব শহরের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে ভয়ের, বিশৃঙ্খলার ও উৎকণ্ঠার দৃশ্য।
সিএনএনের জেরুজালেম প্রতিনিধি জেরেমি ডায়মন্ড ঘটনাস্থল থেকে জানান, চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে ছিল ধ্বংসাবশেষ, উদ্ধারকারী দল ও সেনাবাহিনী ধ্বংসস্তূপে তল্লাশি চালাচ্ছে।একজন নারী সিএনএন-কে বলেন, ‘আমি বেজমেন্টে লুকিয়ে ছিলাম, সেখান থেকেই বিস্ফোরণের ঝাঁকুনি টের পেয়েছি।’তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খুব ধীরে বাইরে এসেছিলাম, কারণ আমরা ভয়ে ছিলাম। হাঁটতে হাঁটতে দেখছিলাম, দালানগুলো ভেঙে পড়ছে। চারদিকে ধোঁয়ার গন্ধ... আমার নাক ঢাকার জন্য টি-শার্ট ব্যবহার করতে হয়েছিল। আমরা রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম, যাতে বেশি ধোঁয়া না টেনে ফেলি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আশেপাশের একটি আবাসিক ভবনের একটি অংশ সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে। ব্লক দূর থেকেও ধ্বংসাবশেষ দেখা যাচ্ছিল। ডায়মন্ড জানান, অন্তত ১০ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে অনেকে ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শনে এসেছেন, কেউ আবার আতঙ্কিত স্বজনদের জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। হামলার ধাক্কা ও অনিশ্চয়তার মাঝে স্থানীয় বাসিন্দাদের মানসিক চাপ বেড়ে গেছে। তেল আবিবের এই পরিস্থিতি ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের ভয়াবহতা আরও গভীরভাবে তুলে ধরছে, যা পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
সূত্র : সিএনএন
আপনার মতামত লিখুন :