• ঢাকা
  • সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

জরুরি অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে নয়, লাগবে মন্ত্রিসভার সম্মতি


FavIcon
অনলাইন ডেস্ক:
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
জরুরি অবস্থা প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্তে নয়, লাগবে মন্ত্রিসভার সম্মতি

জরুরি অবস্থা যেন আর রাজনৈতিক স্বার্থে অপব্যবহৃত না হয়, সে লক্ষ্যে সংবিধানের সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর একক ইচ্ছার ওপর নির্ভর না রেখে মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদনের মাধ্যমে চালু রাখার বিষয়ে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।

রবিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১২তম দিনে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় অংশগ্রহণকারী দলগুলো।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে যুদ্ধ, বহিরাক্রমণ, বা অভ্যন্তরীণ সংকটে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক জীবন হুমকির মুখে, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ নব্বই দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন। তবে তা ঘোষণার আগে অবশ্যই মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন নিতে হবে।

বর্তমান সংবিধানে জরুরি অবস্থার মেয়াদ ১২০ দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি স্বাক্ষরকে বৈধতার শর্ত হিসেবে রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনের মাধ্যমে মেয়াদ কমিয়ে ৯০ দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের বদলে মন্ত্রিসভার সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

‘অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ’-এর মতো রাজনৈতিকভাবে বিভ্রান্তিকর শব্দের পরিবর্তে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতার প্রতি হুমকি, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ’—এমন আরও নিরপেক্ষ ও প্রাসঙ্গিক শব্দ ব্যবহার করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

জরুরি অবস্থার সময়েও সংবিধানের ৪৭(৩) ধারা অনুযায়ী নাগরিকের দুটি অধিকার খর্ব করা যাবে না—(১) জীবনের অধিকার, এবং (২) নির্যাতন ও অমানবিক, নিষ্ঠুর বা মর্যাদাহানিকর আচরণ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার। এটি জরুরি অবস্থাতেও মানবাধিকারের মৌলিক গ্যারান্টি রক্ষার প্রতিশ্রুতি।


সংলাপে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিরোধীদলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পক্ষে মত দেয়। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দেয়, খেলাফত মজলিশ বিরোধীদলকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তির দাবি তোলে, এবং বিএনপি ও জামায়াত মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতার উপস্থিতি নিশ্চিতের আহ্বান জানায়।

শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যে পৌঁছায় যে, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য মন্ত্রিসভার লিখিত অনুমোদন প্রয়োজন হবে এবং সেই বৈঠকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বা তার অনুপস্থিতিতে উপনেতার উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।


Side banner
Link copied!