• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিন আকতারের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:০২ পিএম
শরীয়তপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিন আকতারের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র

ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন-পরবর্তী সময়ে দুর্নীতিবাজ আমলাদের একে একে মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে। তাদেরই একজন মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও বর্তমান শরীয়তপুরে কর্মরত শারমিন আকতার। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া হাসিনা পরিবারের বউমা শারমিন আকতারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে যোগদানের পরপরই শারমিন আকতার বিভাগটিকে দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করেন। আন্দোলনের পর ১৩ আগস্ট তাকে ওএসডি করা হলেও অদৃশ্য শক্তির ইশারায় ১৫ দিনের মধ্যেই উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ প্রকল্পে বদলি করা হয়। পরবর্তীতে ৩ অক্টোবর তাকে গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগে পদায়ন করা হলে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

অভিযোগ রয়েছে, শারমিন আকতার তার স্বামী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জুয়েল ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম বাকী ইবনে হাফিজকে সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন ছাড়া কোনো ফাইল অনুমোদন করতেন না। কমিশনের এই অর্থ লুটপাট করাই ছিলো তার প্রধান কাজ।

তার স্বামী ইঞ্জিনিয়ার জুয়েল মেসার্স বাবর এসোসিয়েটস ও এসএ এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি লাইসেন্স ব্যবহার করে নিজেই ঠিকাদারি ব্যবসায় নেমে পড়েন। প্রকৃতপক্ষে ওই বিভাগের অধিকাংশ কাজই তাদের পরিবার ও সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

পিপিআরের নিয়ম ভঙ্গ করে অসংখ্য টেন্ডার মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা রাখা হয়—শুধু পছন্দের ঠিকাদারকে সুবিধা দিতে। উদাহরণস্বরূপ, টেন্ডার আইডি নং ১৯৮৪৬৪, ১৯৮৪৬০ ও ১৯৮৪৫৬ মাত্র ৪ ঘণ্টার জন্য খোলা রাখা হয় এবং সেদিন রাতেই নিষ্পত্তি করে দেওয়া হয়। এমনকি ব্যাংকিং আওয়ারের বাইরেও টেন্ডার নিষ্পত্তির নজির গড়েছেন তিনি।


মানিকগঞ্জ সমন্বিত অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার এক মাস আগেও ফার্নিচার কেনার নামে টেন্ডার করা হয়। অথচ পরে দেখা যায়, কোনো ফার্নিচার কেনাই হয়নি—টেন্ডারের অর্থ সরাসরি ভাগাভাগি করে আত্মসাৎ করা হয়।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মানিকগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর কবির হোসেন লিখিতভাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু ‘গোপালী সচিব’-এর ইশারায় সব অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে যায়।

স্থানীয় ঠিকাদারদের প্রতিবাদ দমাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাই শেখ সেলিমের প্রভাব খাটিয়ে গুণ্ডাবাহিনী ব্যবহার করা হয়। ফলে ঠিকাদাররা ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাননি।                                                                                     রাষ্ট্র সংস্কারের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে দুর্নীতিবাজ আমলা ও রাজনৈতিক দোসরদের পুনর্বহাল। জনগণের দাবি—শারমিন আকতার ও তার সহযোগীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করতে হবে। অন্যথায় নতুন সরকারের প্রতি আস্থা নষ্ট হবে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এসব বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শারমিন আকতারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তার কোন মুতামত নেয়া সম্ভব হয়নি ।


Side banner
Link copied!