• ঢাকা
  • শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় সাবেক ডিসি সুলতানার জামিন


FavIcon
অনলাইন ডেস্ক:
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:১২ পিএম
সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় সাবেক ডিসি সুলতানার জামিন

কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের মামলায় কারাগারে থাকা তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারিক আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে করা সুলতানা পারভীনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।


আদালতে সুলতানার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফয়জুল্লাহ ফয়েজ প্রমুখ।

অন‍্যদিকে, সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। অন‍্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ‍্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবি।

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর এই মামলায় সুলতানা পারভীনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মোসাম্মৎ ইসমত আরা এই আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট আসামি সুলতানা পারভীন হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেন। হাইকোর্ট তাকে জামিন না দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। এরপর সুলতানা পারভীন গত ২১ আগস্ট কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। তবে তিনি সশরীরে আদালতে উপস্থিত হননি। এ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে সাংবাদিক আরিফের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেন। গত ২ সেপ্টেম্বর আদালত সবকটি আবেদন শুনানি শেষে আসামি সুলতানা পারভীনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, কুড়িগ্রাম শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কার করে ডিসির নামে নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাকে ক্রসফায়ারে দেয়ার উদ্দেশ্যে জেলা শহরের পূর্বে ধরলা নদীর তীরে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে ফিরিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে পেটানো হয়। এরপর মাদক রাখার অভিযোগ দেখিয়ে মধ্যরাতেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এ নিয়ে সারাদেশে প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ শুরু হলে একদিন পর সাংবাদিক আরিফকে জামিন দেয় জেলা প্রশাসন।

জামিনে মুক্তি পেয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় তৎকালীন ডিসি সুলতানা পারভীন ও তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে এজাহার করেন আরিফ। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করে কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশ। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার দীর্ঘ পাঁচ বছর পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। 

চার্জশিটে সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, তৎকালীন আরডিসি নাজিম উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা এবং এস এম রাহাতুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরপর জামিন নিতে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন সুলতানা পারভীন। অপর আসামিরা এখনও আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি।


Side banner
Link copied!