ওপেকের উৎপাদন বৃদ্ধি পরিকল্পনা, যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য আলোচনায় অনিশ্চয়তা এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন—সব মিলিয়ে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচারের দাম ৩ সেন্ট কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৫ দশমিক ৫৯ ডলার, আর ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) অপরিশোধিত তেলের দাম ৫ সেন্ট কমে ৬১ দশমিক ২৬ ডলার নির্ধারিত হয়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান এএনজেড ব্যাংক জানায়, বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি ও ওপেকের সম্ভাব্য উৎপাদন বৃদ্ধিকে ঘিরে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।
ওপেক প্লাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, ডিসেম্বরে সামান্য পরিমাণে তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে এই জোট। কয়েক বছর ধরে বাজার স্থিতিশীল রাখতে উৎপাদন সীমিত রাখলেও, গত এপ্রিল থেকে সেই কাটছাঁট ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশ—যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি বাজারে আশার সঞ্চার করলেও, সেটি এখনও অনিশ্চিত। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠককে ঘিরে বাজার নজর রাখছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞাও বাজারে প্রভাব ফেলছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তেল কোম্পানি লুকোয়েল ও রোসনেফ্ট–এর বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর সোমবার লুকোয়েল ঘোষণা দেয়, তারা তাদের আন্তর্জাতিক সম্পদ বিক্রি করবে—যা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কোনো রুশ কোম্পানির সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল বলেন, “নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়াতে পারে, তবে বিশ্ববাজারে উদ্বৃত্ত সরবরাহ থাকায় প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হবে না।”
হাইটং সিকিউরিটিজ–এর বিশ্লেষণে বলা হয়, “মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদে সরবরাহে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেবে না; বরং অতিরিক্ত সরবরাহই তেলের দামে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।”
আপনার মতামত লিখুন :