• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

দুমকিতে ত্রাণ ও দুর্যোগ বিভাগের প্রায় কোটি টাকার দূর্নীতি, অফিস সহায়ক পলাতক


FavIcon
মাসুম বিল্লাহ, মির্জাগঞ্জ:
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০২৩, ০৯:৫২ পিএম
দুমকিতে ত্রাণ ও দুর্যোগ বিভাগের প্রায় কোটি টাকার দূর্নীতি, অফিস সহায়ক পলাতক
ছবি - সংগৃহীত

পটুয়াখালীর দুমকিতে ত্রাণ ও দূর্যোগ বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের বিলের প্রায় কোটি টাকা দুর্নিতির মাধ্যমে লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কাজ না করে ভুয়া বিলের মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়া সহ টাকা পরিশোধ না করে মেম্বারদের কাছ থেকে বিলে সই করিয়ে নেয়া হয়েছে। পরে সেই টাকা তাদের একাউন্টে  না দিয়ে উত্তোলন করে লোপাট করা হয়েছে। গত  ২০২১-২০২২ অর্থবছরের অন্তত: ২৫/৩০ টি প্রকল্প বিলের সমুদয় অর্থ হাতিয়ে নিয়ে অফিস সহায়ক জুয়েল হাসান লা-পাত্তা হয়ে গেছে।

গত ১০ জুলাই উপজেলার ৩নং মুরাদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন মুরাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো: শাহজাহান খানের লিখিত অভিযোগে উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগের এমন অর্থ কেলেঙ্কারীর ঘটনা প্রকাশ পায়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত পিআইও রাজিব বিশ্বাসের একান্ত অনুগত (আউট সোর্সিং) অফিস সহায়ক জুয়েল হাসানকে দিয়ে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের টিআর, কাবিখা (সাধারণ ও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক) ২য় পর্যায়ের সকল প্রকল্পের বিলের টাকা ইজিপিপি নন-ওয়েজ, ইজিপিপি প্রশাসনিক বিলের টাকা, ট্যাগ কর্মকর্তাদের সন্মানীসহ অফিসের অন্যান্য খাত এবং বিভিন্ন জনকে সুবিধা দেয়ার আশ্বাসে নূন্যতম ১থেকে দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। অভিযোগ রয়েছে, পিআইও রাজিব বিশ্বাস তার দপ্তরের অন্যকোন কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের কোন দাযিত্ব প্রদান করেন না। এ ঘটনা থেকে পারপেতে সুকৌশলে অফিস সহায়ক জুয়েল কে পলাতক দেখাচ্ছে।

এছাড়া দুমকি উপজেলায় নতুন পিআইও পদায়ন হওয়া স্বত্বেও তাকে চার্জ প্রদান করা হয়নি।
মুরাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বর মোঃ মিজানুর রহমান মনোয়ার বলেন, আমার ওয়ার্ডে সিপিসির ৩ টি প্রকল্পের মধ্যে দুটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পিআইও রাজিব বিশ্বাসের নির্দেশে জুয়েল আমার কাছ থেকে একটি ভুয়া বিল সহ ৩ টি বিলে সই করিয়ে নেয় সেসময় আমাদের একাউন্ট নাম্বার নিলেও একাউন্টে কোন টাকা বা চেক দেয়া হয়নি। পরবর্তিতে একটি কাজের ৫০ হাজার ও অপর একটি কাজের ৪০ হাজার টাকা বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে পাঠানো হয়। এখনও আমার ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে এছাড়া ভুয়া বিলে ৯০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন তারা।

৩ নং ওয়ার্ড মেম্বর জহিরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, আমার একটি সিপিসি প্রকল্পের এক লক্ষ টাকার বিল থেকে চেয়ারম্যানের মারফত ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এখনও ৪০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে। পিআইও রাজিব বিশ্বাস আমাকে বিল কাগজে সই দিতে বলায় আমি সই করেছি। এখন শুনি তারা বিল তুলে নিয়ে গেছে। 
মুয়াদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান সিকদার বলেন, পিআইও রাজিব এবং জুয়েল সিপিসি প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। নিয়ম বহির্ভুত ভাবে তারা এ টাকা আত্মসাৎ করেছে। ইউএনও বিল অনুমোদন দিয়েছেনন। সেই বিল সিপিসিদের একাউন্টে না দিযে কিভাবে তুলে নেয়া হলো? আমরা এ বিষয়ে আদালতে মামলা করবো।

এ বিষয়ে জানার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাসের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আল ইমরান বলেন, বিষয়টি অফিসিয়াল ভাবে সমাধান হয়েছে। এ বিষয়ে ফোনে এর বেশি কিছু বলা যাবেনা প্রয়োজন হলে প্রতিনিধির সাথে সামনাসামনি কথা বলতে চান তিনি। তিনি আরো বলেন, আমি বিল অনুমোদন দিয়েছি এর বাইরে কিছু জানিনা।

জেলা প্রশাসক মোঃ নুর কুতুবুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি আগে জানতাম না আমি গত মাসের ২৪ তারিখে পটুয়াখালীতে যোগদান করেছি। বিষয়টি নোট রেখেছি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন,মহাপরিচালকের বরাবরে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ফোনে  তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, তিনি ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।


Side banner
Link copied!