
বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী মামলার রায় নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে ‘অপ্রাসঙ্গিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিচার বিভাগের প্রতি চরম অশ্রদ্ধা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তার আইনজীবী মো. রফিকুল ইসলাম। বুধবার (৩০ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এই প্রতিবাদ জানান।
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ২৭ মার্চ প্রথম যুগ্ম জেলা ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল রায়ে ইশরাক হোসেনের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন। মামলাটি ইশরাক নিজে করেছিলেন, যেখানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট ৯ জনকে বিবাদী করা হয়।
রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় এনসিপির বক্তব্য আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। তিনি বলেন, ‘এনসিপির উদ্বেগ সরাসরি বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ এবং আদালতের আদেশকে অমান্য করার শামিল।’
তিনি আরো দাবি করেন, মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘ পাঁচ বছর স্থগিত ছিল তৎকালীন সরকারের হস্তক্ষেপে। হাইকোর্টে বারবার শুনানি পেছানো, মামলার রিভিশন আটকে রাখা এবং অন্যায়ভাবে দীর্ঘসূত্র তৈরির অভিযোগও করেন তিনি।
আইনজীবীর মতে, মামলার নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত হওয়া আদালতের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এনসিপি যেটিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলছে, তা আইন সম্পর্কে তাদের ‘জ্ঞানের স্বল্পতা’র প্রমাণ।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০২০ সালে হওয়া একটি নির্বাচনী মামলা ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে—এটি সংক্ষিপ্ত সময় নয় বরং আরো আগে হওয়া উচিত ছিল। আদালত যথাযথ আইনি বিধান মেনে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেছেন, নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে।এতে আইনি অসংগতি নেই।’
তিনি জানান, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ এনসিপির রয়েছে, তবে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো সম্পূর্ণ অনৈতিক। বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষায় এনসিপির উচিত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা, আইনগত ব্যাখ্যার ভুল ব্যবহার না করা।
প্রতিবাদপত্রের শেষে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে অর্জিত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা যেন আবার প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য জনগণকে সজাগ থাকতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আদালতের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও আস্থা বজায় রাখা জরুরি।
উক্ত মামলায় শেখ ফজলে নূর তাপস বিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং মামলার জবাব দেন এবং একপর্যায়ে মামলা খারিজ এর জন্য দরখাস্ত করেন। বিজ্ঞ আদালত তৎকালীন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই উভয়পক্ষের শুনানিঅন্তে শেখ ফজলে নূর তাপসের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
সেই আদেশে অসন্তুষ্ট হয়ে বিবাদীপক্ষ মহামান্য হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করে দীর্ঘদিন মামলাটি আটকে রাখে, যার ফলে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরেও তাপসের সরাসরি হস্তক্ষেপে মামলা হাইকোর্টে শুনানি বারবার পিছিয়ে যায় এবং শুনানি না করে ফেলে রাখে। ফলে বিবাদীপক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ও জবাব দাখিল করা সত্ত্বেও মোকদ্দমাটি দীর্ঘদিন অনিস্পন্ন থেকে যায়।
আপনার মতামত লিখুন :