
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় ফের বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড ঘিরে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে। এ ছাড়া পাল্টাপাল্টি মানববন্ধনও করেছেন দুই গ্রামবাসী। দুই পক্ষের লোকজনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উসকানিমূলক কথা বলছেন।ফলে যেকোনো সময় বড় সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনী তৎপর রয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল ও বাড্ডা গ্রামের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। সম্প্রতি সলিমগঞ্জ বাজারের একটি দোকানে বাড্ডা গ্রামের কয়েকজন যুবকের বাকি খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়াইলের লোকজন তাদের বেধড়ক পেটায়।এর জেরে ওই দিনই বাড্ডা গ্রামের লোকজন বাড়াইল গ্রামে হামলা চালায়। পরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বাড্ডা গ্রামের বাসিন্দা মুন্সি আজিজ মিয়া (৫২) নিহত হন। এ ঘটনায় আজিজের স্ত্রী সাহেরা বেগম বাড়াইল গ্রামের সাংবাদিক নেতা নবীনগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, যুগান্তর পত্রিকার নবীনগর প্রতিনিধি মোস্তাক আহমেদ উজ্জ্বলকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।ওই মামলায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে বাড়াইল গ্রামে হামলার ঘটনায় বাড়াইলের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে বাড্ডা গ্রামের ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে নবীনগর থানায় একটি মামলা করেন।
এদিকে হত্যা মামলায় সাংবাদিককে আসামি করায় প্রতিবাদ জানিয়ে গত রবিবার মানববন্ধন করেছে নবীনগর প্রেস ক্লাব। এ ছাড়া হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার বাড্ডা গ্রামের লোকজন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সংঘর্ষের সময় প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না।তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে প্রধান আসামি করা হয়েছে দাবি করে নবীনগর প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. হোসেন শান্তি বলেন, মামলা থেকে সাংবাদিক উজ্জ্বলের নাম বাদ দেওয়া না হলে আমরা বড় ধরনের কর্মসূচিতে যাব। অন্যদিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে থানা ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে বলে মানববন্ধন থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাড্ডা গ্রামবাসী।
এ বিষয়ে বাড্ডা গ্রামের বাসিন্দা মুন্সি আতিকুর রহমান বলেন, আমরা কোনো সাংবাদিককে আসামি করিনি। একজন খুনিকে আসামি করেছি। সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে এলাকায় অবৈধ বালুর ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে এলাকায় নানা অপকর্ম করছে। এই খুন যে সে করেছে, আমাদের কাছে এর প্রমাণও আছে।
নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক বলেন, পুনরায় সংঘর্ষ হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। কারণ, পরবর্তী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় এলাকায় যৌথ বাহিনী সার্বক্ষণিক কাজ করছে। দুটি মামলার তদন্ত চলছে। আমি নিজে এসব মামলা মনিটরিং করছি। ইতিমধ্যে একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :