শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি দপ্তর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে (ইইডি) বদলি-বাণিজ্য, ঘুষ, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী (ডেস্ক–১) ও সাবেক ক্যাশিয়ার শাহজাহান আলী। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের কয়েকটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলোর দাবি, প্রশাসনিক কাঠামোয় উচ্চ পদে না থাকলেও শাহজাহান আলী দপ্তরের বদলি, পদায়ন ও টেন্ডার ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করতেন। বদলি আদেশ জারি হলেও তার ‘অনুমতি’ ছাড়া তা বাস্তবায়ন না হওয়ার অভিযোগও করা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ এক কর্মকর্তা বলেন,“অনেক ক্ষেত্রে কে কোথায় বদলি হবেন—এ সিদ্ধান্তও প্রধান প্রকৌশলীর বাইরে গিয়ে অন্যভাবে প্রভাবিত হতো।”
কুড়িগ্রামে দায়িত্ব পালনকালে শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে—বিল অনুমোদনের আগে ঠিকাদারদের কাছ থেকে ৫% কমিশন দাবি, উপ–সহকারী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে ১% ‘এলাকা কমিশন’,ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের মাধ্যমে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ,
একটি আসবাবপত্র প্রকল্পে ৩৯টির মধ্যে ২৬টি কাজ একজন ঠিকাদারকে দেওয়া।
কয়েকজন ঠিকাদার দাবি করেন, কিছু দরপত্র নির্দিষ্টভাবে তার প্রভাবাধীন ছিল এবং বাইরে কেউ অংশ নিতে চাইলে হয়রানির শিকার হতেন।
কর্মকর্তাদের মতে, ইইডির ভেতরে ঘুষ লেনদেনের একটি সংগঠিত নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে, যেখানে বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীও যুক্ত ছিলেন। সৎ কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও অভিযোগ হিসেবে এসেছে।
অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, শাহজাহান আলী বা তার ঘনিষ্ঠদের নামে এমন কয়েকটি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যা নিয়মিত বেতনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এসব সম্পদের মধ্যে রংপুরে একটি ক্লিনিক, ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাট এবং গ্রামের বাড়িতে জমি রয়েছে বলে অভিযোগ।
ইইডির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের দাবি, দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক অভিযোগগুলো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে দপ্তরের সামগ্রিক দুর্নীতির কাঠামো পরিষ্কার হবে। তানা হলে সরকারি অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।
আপনার মতামত লিখুন :