
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ এবং ৪ দফা দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মশাল মিছিল ও প্রতীকী সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে ‘ফ্যাসিবাদীবিরোধী মঞ্চ’-এর ব্যানারে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়। ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে রাত সাড়ে আটটা থেকে বরিশাল-কুয়াকটা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধের মাধ্যমে শেষ হয় মিছিল। এই কর্মসূচি চলে রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে সাধারণ পথযাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) নাম থাকা শিক্ষার্থীরা শরীরে দড়ি বেঁধে প্রতীকী প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি, জুলাই বিপ্লবের পর তারা ভেবেছিলেন একটি ভিন্নধর্মী, মুক্ত চিন্তার বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে পাবেন।কিন্তু বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। বরং আগের মতোই ফ্যাসিবাদী আচরণ ও বৈষম্য অব্যাহত রয়েছে।
সাধারণ ডায়েরিতে ২ নম্বরে নাম থাকা শিক্ষার্থী নাজমুল ঢালী বলেন, “আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছি। অথচ আমাদের ভয় দেখিয়ে দমন করার চেষ্টা চলছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।এজন্যই আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়কে ফ্যাসিবাদমুক্ত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা জুলাই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে, তাদের প্রশাসনিক পদে রাখা যাবে না। উপাচার্য প্রতিটি যৌক্তিক আন্দোলনের জবাবে মামলা করছেন, যা ইতিহাসে বিরল।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবি হলো-
জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সহযোদ্ধা ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা ও অপমানজনক অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং তাকে আগের দায়িত্বে পুনর্বহাল করতে হবে। নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার এবং জুলাই গণহত্যার সমর্থক চাটুকার শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রশাসনিক ও লাভজনক পদ থেকে অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব গ্রহণের পর উপাচার্য দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন না করে বরং বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করেছেন। এজন্য তাকে প্রকাশ্যে দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেও সময়মতো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা না বলায় এবং দাবি না মানায় আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক অবরোধ উঠিয়ে নেন।
আপনার মতামত লিখুন :