ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি, অনিয়ম ও নারীদের ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় তার অপকর্ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও আজ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তিনি বহাল তবিয়তে একই কর্মস্থলে প্রায় ১৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন—যা প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্র ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী, বজলুর রশিদ শহর ও শহরতলির বিভিন্ন খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁ, বেকারি, মিষ্টির দোকান, মুদি দোকান এবং ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে লেবার বডি ফিটনেস সার্টিফিকেট ও স্যানিটারি লাইসেন্স নবায়ন বাবদ সরকার নির্ধারিত ফির চেয়েও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে আসছেন। টাকা না দিলে লাইসেন্স জটিলতা সৃষ্টি কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখানো তার নিত্যদিনের কৌশল বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, “বজলুর রশিদ টাকা ছাড়া কোনো কাজই করে না। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করা হয়।”
অভিযোগের আরও ভয়ংকর দিক হলো—বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে নারীদের ব্ল্যাকমেইল ও যৌন হয়রানির অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে, আবাসিক হোটেল থেকে আটককৃত নারী ও বিউটি পার্লারে কর্মরত নারীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করতেন তিনি। ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, কখনো আর্থিক সহায়তার নামে টাকা ধার দিয়ে পরে হঠাৎ সেই টাকা ফেরতের চাপ সৃষ্টি করে আবেগগত ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন করতেন বজলুর রশিদ। প্রয়োজনে স্থানীয় প্রভাবশালী সাবেক স্বৈরাচারী মহলের নাম ব্যবহার করে ভয় দেখানো হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে একাধিক নারীর সংসার ভেঙে গেছে, যারা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এত গুরুতর অভিযোগ ও সংবাদ প্রকাশের পরও কেন বজলুর রশিদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি—তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল ধরে রাখা এবং অভিযোগের পরও বহাল থাকা প্রশাসনিক দুর্বলতা ও সম্ভাব্য প্রভাবশালী যোগসাজশের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
অভিযোগ বিষয়ে সেনিটারী ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে, তিনি কোন সদ উত্তর না দিতে পারেন নি।বিস্তিরিত ধারাবাহিক প্রতিবেদন আগামীতে.........।
আপনার মতামত লিখুন :