
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বাকুলিয়া গ্রামে সাদা পোশাকে কিশোরী উদ্ধারে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর পুলিশের হামলা এবং অন্যায়ভাবে নিরীহ মানুষের নামে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বুধবার (৭ মে) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘন্টাব্যাপী ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের খয়েরতলা-বাকুলিয়া এলাকায় ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বাকুলিয়া গ্রামের গৃহবধূ শিউলি খাতুন বলেন, গত সোমবার বিকেলে কয়েকজন পুলিশ বাকুলিয়া গ্রামে আসে। তাদের শরীরে পুলিশের কোনো পোশাক ছিল না।সাদা পোশাকে এসে ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক উদ্ধার করে নিয়ে যেতে চায়। এ সময় হাতাহাতি হয়। এরপর এক নারী পুলিশ তার হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে মাছুরার নাকে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
কনিকা খাতুন নামে আরেক গৃহবধূ বলেন, এখনো সেই আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের মতো আচরণ করছে পুলিশ।গ্রামে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এখন ধান কাটার সময়। কিন্তু কেউ মাঠে কাজে যেতে পারছে না।রাত হলে গ্রামে কোনো পুরুষ থাকতে পারছে না। পুলিশ এসে নিরীহ মানুষদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। গভীর রাতে মাঠ থেকে ধান আনার সময় দুজনকে ধরে নিয়ে গেছে এই মামলায়।
বাকুলিয়া গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, পুলিশের আতঙ্কে বাকুলিয়া গ্রামে পুরুষ মানুষ রাতে বাড়িতে থাকতে পারছে না। রাতে গ্রামের নারীরা সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে।পুলিশ সাদা পোশাকে পরিচয় না দিয়ে কেন একটা মেয়েকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাবে। তারা কেন পুলিশ পরিচয় দেয়নি, কেন পুলিশের পোশাক ছাড়া এসেছে। এটা তো অন্যায়। তারা অন্যায় করল অথচ পুলিশ বাদী হয়ে গ্রামের মানুষের নামে মামলা দিয়েছে।
জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে যশোর কোতোয়ালি থানা থেকে এএসআই তাপস কুমার পাল, কনস্টেবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন পুলেরহাট এলাকার এক কিশোরীকে উদ্ধারে সাদা পোশাকে বাকুলিয়া গ্রামে যায়। সে সময় তারা প্রথমে সুজনের ঘরে ঢুকে তাকে চর-থাপ্পড় মেরে মেয়েটিকে হাত ধরে টেনে বের করে নিয়ে আসে। সে সময় অন্যরা প্রতিবাদ করলে কয়েকজনকে তারা থাপ্পড় মারে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হলে তারা হাতাহাতিতে জড়ায়। এ সময় পুলিশ সদস্য রাবেয়া এক গৃহবধূর নাকে ঘুষি মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরে ওই এলাকার ৬ থেকে ৭ জন ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে মারধর করে।
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য শওকত আলী বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৭০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :