• ঢাকা
  • বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

শরীয়তপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের চেষ্টা


FavIcon
নুরুজ্জামান শেখ:
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৫, ১২:৪৯ পিএম
শরীয়তপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থীকে ধর্ষনের চেষ্টা

শরীয়তপুর পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বখাটেদের দ্বারা শ্লীলতাহানীসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছে এক শিক্ষার্থী। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরেক সহপাঠীকে আটকে রেখে মারধর করার  অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুর শহরের বনবিভাগের কার্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, তিনি শরীয়তপুর সরকারী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মঙ্গলবার বিকালে পরীক্ষা শেষে তার ছেলে বন্ধুর সঙ্গে নিয়ে মনহর বাজার মাটি হাড়ির রেস্টুরেন্ট থেকে খাওয়া দাওয়া শেষে গাড়ীর অপেক্ষায় হাঁটতে হাটতে বনবিভাগের কাছে আসে। এ সময় কলেজ ছাত্র সজিব আহম্মেদকে গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে তাদের বনবিভাগের মধ্যে নিয়ে ওই ছেলে শিক্ষার্থীকে মারধর করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর কলেজ ছাত্র সজিব আহম্মেদকে অন্যত্র নিয়ে যায়। এর পর ৮ থেকে ১০ জন বখাটে যুবক ঐ ছাত্রীর অভিভাবকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে দীর্ঘ ২ ঘন্টা আটকে শ্লীলতাহানীসহ ধর্ষনের চেষ্টা করে। ছাত্রী নিজেকে বাচানোর চেষ্টা করলে তাকেও নির্যাতনসহ মারধর করে। এ সময় স্থানীয় দুই যুবক পাশ দিয়ে যাওয়া সময় ছাত্রী গিয়ে বিয়টি খুলে বললে তারা পালং মডেল থানায় অবহিত করে। থানা পুলিশ ঘটনাস্তালে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
তার সঙ্গে ওই ছেলে শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনার্স  প্রথম বর্ষের  ফাইনাল পরীক্ষা শেষে মনহর বাজার মাটির হাড়ি রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করতে যায়। বাড়ী যাওয়া উদ্দেশ্যে গাড়ীর অপেক্ষায় হাটতে হাটতে বনবিভাগের কাছাকাছি আসলে প্রথমে দুই বখাটে এসে আমাকে নাম জিজ্ঞাস করে  এবং বলে বাড়ী কোথায় ? আলাদা ভাবে কলেজ ছাত্রীকে বিভিন্ন জিজ্ঞাসবাদ করে। এরপর আমাকে মারধর করে। আমাকেসহ দুইজনকে জোরপূর্বক বনবিভাগে নিয়ে যায়। আর আমার ওই বান্ধবীকে জোর করে একটি ঝোপের দিকে টেনে নিয়ে যায়। কমপক্ষে ২ ঘন্টা আমাদের আটকে রাখে  এবং ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ৮ থেকে ১০ জন বখাটে শ্লীলতাহানীসহ ধর্সনের চেষ্টা করে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, বনবিভাগের সামন থেকে আমাকে ও আমার বন্ধুকে কমপক্ষে ১০ জন টেনে হেছড়ে ভিতরে নিয়ে যায়। আমাকে নির্যাতনসহ মারধর করে এবং জোরপূবক ধর্ষণের  চেষ্টা করে। বাচার জন্য ডাকচিৎকার করি। এ সময় বনবিভাগের ভিতরে কর্মকর্তা ও কর্মচারী ছিল। পাশে দুই নারী ছিল। তবুও তারা আমাদেকে উদ্ধার করতে আসেনি। 
ঘটনার পর প্রথম তাদের দেখা শাহাবুদ্দিন নামের এক স্থানীয় বলেন, আমি মনোহর বাজার থেকে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎ দেখি ৫/৬ জন বখাটে মেয়ে সাথে বসা। আমি মেয়েটা কাছে যাই। তখন মেয়েটা এসে আমার পা পেচিয়ে ধরে এবং বলে আমাকে বাচান। পরে তাকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। আমাদের এলাকার পরিচিত ২/১ জন থাকতে পারে  এবং পাশের এলাকাসহ ১০ থকে ১২জন  মিলে নির্যাতন সহ  ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে পুলিশকে ফোন করি।
সৈয়দ রাব্বি নামের আরেক স্থানীয় বলেন, “আমাকে দেখে মেয়েটি পায়ে পড়ে সাহায্য চায়। আমি দ্রুত তাকে একটি দোকানে নিয়ে বসাই। পরে সে অসুস্থ হওয়ায় লোকজন নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি ও পুলিশকে খবর দেই। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তির দাবি জানাই।”
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক খন্দকার রাশেদ আহম্মেদ বলেন, “মেয়েটি আমাদের কাছে জানিয়েছে তাকে শারীরিকভাবে মারধর ও যৌন নিপীড়ন করা হয়েছিল। আমাদের নারী চিকিৎসক আসার পর তার পরিক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ধর্ষণের  কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পালং মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, মেয়েটি রাতে শরীয়তপুর সরকারী শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। সকালে বলছে অন্য কথা। আসলে সে শরীয়তপুর সরকারী কলেজের ছাত্রী না। তার বাড়ী ঠিকানা ভ‚ল দিয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বে সঙ্গে চদন্ত করছি এবং অপরাধিদের গ্রেফতারের চেষ্ট করছি।


Side banner

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর

Link copied!