
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামে একটি সেতু নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে সেতুটি নির্মাণে লাখ লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। গ্রামবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে লোহাগড়ায় ১৬টি সেতু নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। ওই দরপত্রের প্যাকেজ নং-৪ এ আমাদা হাজরাখালী খালের ওপর গোলাম নবীর বাড়ির পাশে সেতুটি নির্মাণ করার কথা ছিল। কিন্তু স্থান পরিবর্তন করে নির্ধারিত স্থানের অন্তত তিন-চার শ ফুট দূরে হাসান মৃধার বাড়ির পাশে ৩০ লাখ ৭৯ হাজার ৩৬৪ টাকা ব্যয়ে ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্য সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিত সেতুটির গভীরতা বা মোট উচ্চতা ১৯ ফুট করার কথা থাকলেও করা হয়েছে সর্বসাকুল্যে ১৫ ফুট। যে কারণে সেতুটির ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল। তাই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী। তাছাড়া সেতুটির দু পাশে সংযোগ সড়ক এখনো তৈরি করা হয়নি। অথচ সংযোগ সড়ক করা বাবদ বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ উত্তোলন করে মেসার্স ফারহান এন্টারপ্রাইজের মালিক ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম.এ করিম ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। সেতুটির উইং ওয়াল তৈরিতে দরপত্রের পরিমাপ মানা হয়নি। সেতুটির নিচের অংশের বেজ ঢালাইয়ে রড ও বালুর ব্যবহার দপরপত্র অনুয়ায়ী হয়নি বলেও অভিযোগ। আমাদা গ্রামের আব্দুর ওহাব গাজীর ছেলে সিদ্দিকুর রহমান গাজী অভিযোগ করেন, সেতুটির গভীরতা ১৯ ফুট করার কথা থাকলেও ঠিকাদার ও পিআইও’র যোগসাজশে ১৫ ফুট করা হয়েছে। সেতুটি যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। এখনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। বৃদ্ধ ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা চলাচল করছেন ঝুঁকি নিয়ে। একই গ্রামের সিন্টু সরদার বলেন, সেতুটি যতটুকু গভীর থেকে করার কথা তা করা হয়নি। গ্রামবাসীর অভিযোগ, মূলত উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম.এ করিমের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সেতু নির্মাণে অনিয়ম করেছেন। লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম.এ করিম অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সেতুটির স্থান পরিবর্তন করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গ্রামবাসী। সেতুর ডিজাইন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরিবর্তন করা যায়। মেসার্স ফারহান এন্টারপ্রাইজের মালিক ঠিকাদার আশরাফ মুন্সী বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নামে সেতুটির কাজ হয়েছে, কিন্তু আমি কাজটি করিনি। করেছেন সাব-ঠিকাদার উজ¦ল। সাব- ঠিকাদার উজ¦ল বলেন, আমি দরপত্র মোতাবেক কাজ করেছি। গ্রামবাসী দুদকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সরেজমিনে পরিদর্শন করে সেতুটি নির্মাণে অনিয়মের তদন্ত দাবি করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :