• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

শরীয়তপুরে জাজিরা থানার ওসি মাইনুলের বদলির খবরে জাজিরাবাসীর স্বস্তি


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৫, ১১:২৪ এএম
শরীয়তপুরে জাজিরা থানার ওসি মাইনুলের বদলির খবরে জাজিরাবাসীর স্বস্তি

শরীয়তপুরের জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাইনুল ইসলামের অন্যত্র বদলির খবরে জাজিরাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। দীর্ঘদিন ধরে ওসি মাইনুল ইসলামের নানা অপকর্মে জাজিরাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছিল। গ্রেফতার বাণিজ্য থেকে শুরু করে গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায়, এলাকার ধনাঢ্য ও নিরিহ লোকজনকে থানায় ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগ তকমা লাগিয়ে জেলে ঢুকানোর হুমকি দিয়ে টাকা আদায়, মামলার ধারা বাড়িয়ে-কমিয়ে দেয়ার কথা বলে ওসি মাইনুল ইসলাম বিভিণ্নভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ ও তদন্ত কার্যক্রমে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন যাবত ক্ষমতার অপব্যবহার করে লোকজনকে নির্যাতন করায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছিল। ওসি মাইনুল ইসলামের বদলির খবরে শত শত লোক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্বস্তির বাণী লিখেছেন। মো. জুয়েল বেপারী ফেসবুকে লিখেছেন, “জাজিরা থানায় এ পযর্ন্ত যত ওসি এসেছিল, তাদের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ওসি মাইনুল ইসলাম।” মো. শহিদ লিখেছেন, “এই মাইনুলের উপর আল্লাহর গজব পরুক, এই ওসি জাজিরায় মানুষকে খুব জালাইছে, যাওয়ার আগেও কাজীর হাটের মাছ ব্যবসায়ী খবির মাদবরকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করেছে।” লিটন আকন লিখেছেন, “ দুদককে অনুরোধ করছি, তার আর্থিক বিষয় তদন্ত করা হোক, ৫ মাসে ভালো কিছু টাকা অসৎ উপায়ে কামিয়েছে” অপর একজন লিখেছেন, ‘‘কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছে জাজিরা থেকে।” মোহাম্মদ আকাশ মাদবর লিখেছেন, “আলহামদুলিল্লাহ, এবার জাজিরার মানুষ শন্তিতে থাকতে পারবে।” রেদোয়ান লিখেছেন, “জাজিরার মানুষ বেঁচে গেছে, চট্রগামের মানুষ বিপদে পড়ছে।” শত শত লোক আলহামদুলিল্লাহ লিখে স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছেন। 

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ওসি মাইনুল ইসলামের রোষানলে পড়ার ভয়ে সাধারণ লোকজন, ব্যবসায়ী এমনকি বিভিণ্ন রাজনৈতিক লোকেরাও তার নানা অনিয়ম ও অপকর্মে বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শরীয়তপুর জেলা জজ কোর্টের একজন আইনজীবী বলেন, ওসি মাইনুল ইসলামকে চাহিদা মোতাবেক টাকা না দেয়ায় স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সাজিয়ে কোর্টে চালান দেয়া হয়েছিল। এছাড়া অর্থের বিনিময়ে মামলার আসামীদের গোপনে ছেড়ে দিয়েছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগ সাজিয়ে গ্রেফতার করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে রাতে বৈঠক করে ছেড়ে দিয়েছেন। ওসি মাইনুল ইসলামকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জেলাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদিকে জাজিরা থানার পর ওসি মাইনুল ইসলাম নড়িয়া থানায় বদলী হওয়ার প্রাণপন চেষ্টা করেছিলেন। কারণ নড়িয়া থানার অধিকাংশ লোকজন ইতালী ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসী। নড়িয়া থানা ধনাঢ্য এলাকা হওয়ায় সেখানে বদলি হওয়ার জন্য তিনি বিভিণ্নভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। ওসি মাইনুল ইসলামের বদলির খবর প্রকাশের পর অনেকেই জানান, ফলে ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ কিছুটা হলেও সহজ হবে।

জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জেলার পুলিশ সুপারের পর ৫২৭টি থানার ওসিও লটারির মাধ্যমে বদলি করেছে সরকার। জাজিরা থানায় নতুন ওসি আসার খবরে- আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, সেবার মান বৃদ্ধি এবং থানায় জনগণের প্রতি আরও সহনশীল ও জবাবদিহিমূলক আচরণ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে এলাকাবাসী আশা প্রকাশ করছেন ।

এসব বিষয় সম্পর্কে মুঠোফোনে জানতে চাইলে জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, যারা লিখেছে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেন-একথা বলে সংযোগ কেটে দেন।


Side banner

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর

Link copied!