• ঢাকা
  • সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মাকে লেখা শহীদ আনাসের চিঠি ট্রাইব্যুনালে পড়লেন চিফ প্রসিকিউটর


FavIcon
অনলাইন ডেস্ক:
প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৭:৫৮ পিএম
মাকে লেখা শহীদ আনাসের চিঠি ট্রাইব্যুনালে পড়লেন চিফ প্রসিকিউটর

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর চানখাঁরপুলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন দশম শ্রেণির ছাত্র আনাস। আজ চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ‘আনাসের মাকে লেখা তার হৃদয়স্পর্শী চিঠিটি’ পড়ে শুনিয়েছেন।

চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দাখিল করা প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগের মধ্য থেকে চিঠি পড়ে শোনান চিফ প্রসিকিউটর। 

এ সময় বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে কিছুক্ষণের জন্য পিনপতন নীরবতা নেমে আসে।

গত ৫ আগস্ট বিগত সরকার পতনের কয়েক ঘণ্টা আগে রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন দশম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার খান আনাস। ওই দিন ঘর থেকে বের হওয়ার আগে, মাকে উদ্দেশ করে একটি চিঠি লিখে রেখে যান আনাস। হৃদয়স্পর্শী সে চিঠিতে আনাস লেখেন.....

‘মা, আমি মিছিলে যাচ্ছি। আমি নিজেকে আর আটকিয়ে রাখতে পারলাম না।সরি আব্বুজান। তোমার কথা অমান্য করে বের হলাম। স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে থাকতে পারলাম না। আমাদের ভাইরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথে নেমে সংগ্রাম করে যাচ্ছে।অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিচ্ছে। একটি প্রতিবন্ধী কিশোর, ৭ বছরের বাচ্চা, ল্যাংড়া মানুষ যদি সংগ্রামে নামতে পারে, তাহলে আমি কেন বসে থাকব ঘরে। একদিন তো মরতে হবেই। তাই মৃত্যুর ভয় করে স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে সংগ্রামে নেমে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যু অধিক শ্রেষ্ঠ। যে অন্যের জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেয় সে-ই প্রকৃত মানুষ।আমি যদি বেঁচে না ফিরি, তবে কষ্ট না পেয়ে গর্বিত হয়ো। জীবনের প্রতিটি ভুলের জন্য ক্ষমা চাই।
আনাস।’

 

আজ রবিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চানখাঁরপুলে গুলি করে ৬ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় (ফরমাল চার্জ) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে আদেশ দেন এবং পরবর্তী শুনানির জন্য ৩ জুন দিন ধার্য করেন।

গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া হত্যার শিকার হন।

ওই হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামী করা হয় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৮ জনকে। 

যাদের মধ্যে গ্রেফতার আছেন- ইন্সপেক্টর আরশাদ, কনস্টেবল মো. সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম।


Side banner
Link copied!