• ঢাকা
  • সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

ঢাকা ওয়াসার সচিব মশিউর রহমান খানের দুুর্নীতি !


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
ঢাকা ওয়াসার সচিব মশিউর রহমান খানের দুুর্নীতি !

ঢাকা ওয়াসা দেশের রাজধানীর পানি ও আবহাওয়া ব্যবস্থাপনার মূল প্রতিষ্ঠান। একাধিক কর্মকর্তা ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের অভিযোগ অনুসারে, সংস্থাটির নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে সচিব মশিউর রহমান খানের নাম এই অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত বলে সূত্রগুলোতে উল্লেখ রয়েছে।

ওয়াসার কর্মকর্তারা জানান, গত এক বছরের মধ্যে ৩০০টির বেশি আউটসোর্সিং নিয়োগে প্রতিটি নিয়োগে পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে সংস্থার কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেকেই চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, কিছু বদলি আদেশও জারি হওয়ার পর বাতিল করা হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে নিয়োগ ও বদলির প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নেই।

শ্রমিক ইউনিয়নের একাধিক নেতার দাবি, নিয়োগবাণিজ্য ও বদলির পাশাপাশি বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তিতেও অর্থ লেনদেন হচ্ছে। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সচিব ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে নিজমত জনবল নিয়োগ করছেন। ফলে প্রকল্পগুলো সময়মতো সম্পন্ন হচ্ছে না এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

সংস্থার ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সচিব মশিউরের স্বাক্ষরে কিছু বদলি আদেশ জারি হলেও তা পরে বাতিল করা হয়েছে। অনিয়ম ও ঘুষের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “প্রমাণ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কিন্তু প্রক্রিয়াটি ধীরগতিতে চলছে।”

অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ ও বদলির পাশাপাশি কিছু কর্মকর্তার কাছ থেকে ব্যক্তিগত চিকিৎসার খরচের অজুহাতে অর্থ নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া প্রকল্প নিয়োগ ও কারিগরি সফরের ক্ষেত্রেও অভিজ্ঞতার তুলনায় ব্যক্তিগত প্রভাবকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ আছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ঢাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যদি স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগতভাবে পরিচালিত না হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক উভয়ের জন্যই ক্ষতি হয়। তারা সতর্ক করেছেন যে, ঘুষ ও ক্ষমতার অপব্যবহার চলতে থাকলে ওয়াসার প্রকল্প কার্যক্রম স্থবির হয়ে যেতে পারে এবং জনসাধারণের পানি ও স্যানিটেশন সেবার মান হ্রাস পাবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াসার সকল নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলির প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে যে, কার্যকর নজরদারি না হলে অনিয়ম আবারও শুরু হতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ওয়াসার অভ্যন্তরীণ নিয়োগনীতি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া পুনর্গঠন করা প্রয়োজন। স্বচ্ছ নিয়োগ ও পদোন্নতির প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করা না হলে সংস্থার সেবা প্রদান দুর্বল হবে এবং জনমত নেতিবাচক প্রভাবিত হবে।
এ ব্যাপারে সচিব মশিউর রহমান খানের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন করেও তার সারা পওয়া যাইনি।
সর্বশেষ, ওয়াসার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রয়োজন অনুসন্ধান ও তদন্ত। ঘুষ-দুর্নীতি ও প্রভাবশালী নিয়োগের অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে এসেছে। সরকারের উচিত এই অভিযোগগুলো দ্রুত যাচাই করা এবং প্রমাণ সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে ঢাকা ওয়াসার সেবা মান বজায় থাকে এবং জনগণ সংস্থায় আস্থা রাখতে পারে।


Side banner
Link copied!