• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২

শরীয়তপুরে মূলনা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০৮:৪৩ পিএম
শরীয়তপুরে মূলনা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ

শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাদবরের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। চেক জালিয়াতি মামলায় আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও তিনি পুনর্বহালের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

একটি চেক জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগের পর স্থানীয় প্রশাসন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। অথচ আইনের শাসনকে উপেক্ষা করে তিনি পুনরায় দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য দাফতরিক প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলছে—“সাজাপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি কীভাবে পুনর্বহালের আবেদন করতে পারে?”

কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ: চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাদবরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে প্রায় ৪০ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ। তার বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগগুলো উঠেছে—

আশ্রয়ণ প্রকল্পে অনিয়ম : গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দ ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে অসহায় মানুষের কাছ থেকে ঘুষ আদায়।

কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য বরাদ্দ সরকারি ডিপ টিউবওয়েল বণ্টনে ব্যাপক অনিয়ম এবং ঘুষ গ্রহণ।

ইউনিয়নবাসীর কাছ থেকে সংগৃহীত বাড়ি ও দোকানের ট্যাক্স সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ।

কৃষকদের জন্য বরাদ্দ ভর্তুকি মূল্যের সার কালোবাজারে বিক্রি করে ব্যক্তিগত লাভবান হওয়া।

আব্দুল জলিল মাদবর সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং সাবেক এমপি বি এম মোজাম্মেল হকের ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের একটি প্রভাবশালী অংশের সমর্থন থাকায় তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে এলাকাবাসী। দলীয় বিভাজন ও প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়কেই এই অনিয়মের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন তারা।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলার ইউএনও কাবেরী রায় জানান, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


চেয়ারম্যানের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ বলছে—
“দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত কেউ কীভাবে আবার দায়িত্ব ফিরে পেতে চায়, তা বোধগম্য নয়। প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ ব্যবস্থা না নেয় তবে সমাজে আইনের শাসন ও শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে।”


এলাকার সর্বস্তরের মানুষের দাবি, চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মাদবরের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকার দুঃসাহস না দেখায়।


Side banner
Link copied!