• ঢাকা
  • বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

শরীয়তপুরে এলজিইডির সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ, স্থানীয়রা ক্ষুব্দ


FavIcon
নুরুজ্জামান শেখ, শরীয়তপুরঃ
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম
শরীয়তপুরে এলজিইডির সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ, স্থানীয়রা ক্ষুব্দ

শরীয়তপুরে ডামুড্যা উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন আর সি আই পি প্রকল্পের অধীনে শিধলকুড়া মুন্সির হাট সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উন্নয়নমূলক কাজের বিপরীতে নির্ধারিত হারে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে খোদ ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী নাবিল আহম্মেদ বিরুদ্ধে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কারনে স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দেয়। কাজ বন্ধের পরবর্তীতে উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে মান সম্মত কাজ করার আশ্বাসে পুনঃরায় কাজ চালু করে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন টেশনিক্যাল বিষয়গুলি প্রকৌশলীরা জানে। তাই উপজেলা প্রকৌশলীকে মালামাল চেক করে ,পরিবর্তন করে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।  

 জেলা শ্রমিক দলের সহ সভাপতি জয়নাল আবদীন ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ডামুড্যা উপজেলার আর সি আইপি প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যায়ে শিধল কুড়া থেকে মুন্সির হাট পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজ। বিগত সরকারের আমলে ২৪ সালের ২৫ এপ্রিল মাসে এ কাজের দরপত্র আহবান করে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসাবে কাজটি পান গোপালগঞ্জ জেলার মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রার্দাস। ২৪ সালের ৭ আগষ্ট কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। ২৬ সালের জানুয়ারী মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা। যার স্বত্বাধীকারী মোঃ কামরুল ইসলাম। বর্তমানে সাব ঠিকাদার হিসাবে কাজটি করেন খলিলুর রহমান গংরা। ৬ কিলামিটার এ রাস্তার ৪ দশমিক ৯ মিটার প্রশস্ত সাব বেইজ ও কার্পেটিং সহ মোট ৩ ইঞ্চ উচ্চতা হওয়ার কথা। সেখানে প্রায় ২ ইঞ্চি ইটের খোয়ও বালূও মিশ্রন দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন খুবই নিম্নমানের পুরোনো ইটের খোয়া ছিটিয়ে দিচ্ছে । ফ্রেশ বালু মিশানেরা কথা থাকলেও সেখানে কাদা মাটি মিশানো হচ্ছে। ইটের সাব বেইজের উপর ৪০ মিলিমিটার হবে কার্পেটিং। নিম্ন মানের ইট আর কাদা মিশ্রন দেখে স্থানীয় লোকজন গতকাল মঙ্গলবার সকালে কাজে বাধা দেয়। পরে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার সেতু সেখানে যান এবং মান সম্মত ভাবে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী নাবিল আহাম্মেদ কে নির্দেশ দেন। তবে কোন রকম পরিবর্তন ছাড়াই কিছুক্ষন পরে আবার উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশে কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এতে চরম ভাবে ক্ষুব্ধ হন এলাকাবাসী ।

শিধলকুড়া এলাকার জাহাঙ্গীর সরদার বলেন, খুবই নিম্নমানের মানের ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এটা দেখে আমরা এলাকাবাসী বাধা দিয়ে ছিলাম। পরে ইউএন এসে দেখে যান। তার পর ও সে নিম্নমানের মানের ইট দিয়ে কাজ চলছে। 

স্থানীয় এনজিও কর্মী গৌতম পাল বলেন, এ রকমভাবে কাজ করলে রাস্তা একবছরের মধ্যে আবার নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা চাই ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করা হঊক।

কলেজ ছাত্র জিহাদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে এত খারাপ কাজ হওয়ার কথা না। আমরা স্থানীয়রা কাজ বন্ধ করে দিলে প্রকৌশলীরা এসে আবার কাজ চালু করে দেয়। 

সহকারী প্রকৌশলী (এস ও) ফিরোজ আহাম্মেদ বলেন, কাজ টি ডব্লিউ এম এম পদ্ধতির হওয়ার কারনে ইটের খোয়া ও বালু ভিজানো অবস্থায় মিশানোর কারনে ইট খারাপ দেখা যায়। আসলে ইটের মান ভালো । 

ঠিকাদার সাইদুর রহমান বলেন, আমরা সিডিউল অনুযায়ী কাজ করছি। কাজের কোন ত্রুটি নেই।

ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী নাবিল আহাম্মেদ বলেন, কাজ ভালো মানেই হচ্ছে। স্থানীয় লোকজনকে চান্দা না দেওয়ার কারনে নিম্নমানের কাজ বলে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ সব ব্যাপারে আমাকে ফোন দিবেন না। আমি এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য দিতে রাজি নই।  

ডামুড্যা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, ঘটনা শুনে আমি এলাকায় যাই টেশনিক্যাল বিষয়গুলি প্রকৌশলীরা জানে। তাই উপজেলা প্রকৌশলীকে মালামাল চেক করে ,পরিবর্তন করে সিডিউল অনুযায়ী কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।


Side banner
Link copied!